প্রোগ্রামিং শেষের শুরু

প্রোগ্রামিং  শেষের শুরু
আমরা বইয়ের শেষ অধ্যায়ে চলে এসেছি। তোমরা যদি আগের অধ্যায়গুলো ঠিকমতো পড়ে থাকো, উদাহরণগুলো নিজে নিজে কম্পিউটারে চালিয়ে দেখে থাকো এবং যখনই আমি তোমাদেরকে কোনো প্রোগ্রাম নিজে লিখতে বলেছি, সেগুলো নিজে লিখার চেষ্টা করে থাকো, তাহলে তোমাকে অভিনন্দন! তুমি প্রোগ্রামিং শেখার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেছ। যদি বলতে পারতাম তুমি প্রোগ্রামিং শিখে ফেলেছ তবে তোমাদেরও ভালো লাগত, আমারও ভালো লাগত, কিন্তু মিথ্যা কথা বলে কী লাভ?
প্রোগ্রামিং হচ্ছে চর্চার বিষয়। মুখস্থ করে পরীক্ষায় অনেক ভালো রেজাল্ট করা যায়, এমনকি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রোগ্রামিং পরীক্ষাতেও মুখস্থ করে অনেকেই বেশ ভালো নম্বর পায়। তবে এই ভালো নম্বর পাওয়ার সঙ্গে ভালো প্রোগ্রামার হওয়ার আসলে কোন সম্পর্ক নেই। প্রোগ্রামিং হচ্ছে একধরনের দক্ষতা (skill) এবং কেবল নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমেই এই দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব। এর জন্য ভালো ছাত্র হওয়ার দরকার নেই, জিনিয়াস হওয়ারও কোনো দরকার নেই। দরকার হচ্ছে প্রোগ্রামিংকে ভালোবাসা। যখন তুমি প্রোগ্রামিং করতে বসলে খাওয়াদাওয়ার কথা ভুলে যাবে, রাতে কোনো প্রোগ্রামিং সমস্যা নিয়ে কাজ শুরু করলে আর কিছুক্ষণ পরে দেখবে বাইরে ভোরের আলো ফুটছে, কিংবা ভুলে বাথরুমের স্যান্ডেল পরে ক্লাসে চলে যাবে, তখন বুঝবে যে তুমি প্রোগ্রামার হয়ে যাচ্ছ।
এখন তোমার উচিত হবে বইটি আরেকবার পড়া এবং সঙ্গে সঙ্গে প্রোগ্রামগুলো আবার করা। তারপর তোমরা আরও বেশি সি শিখতে চাইলে সি-এর কোন বই পড়তে পারো। তোমরা যদি প্রোগ্রামিং কন্টেস্টের ব্যাপারে উৎসাহী হও তবে সি প্লাস প্লাস (C++) শেখা শুরু করে দিতে পারো কোন বই থেকে। আবার জাভা (Java), সি শার্প (C#), পিএইচপি (PHP) কিংবা পাইথন (Python) শিখতে পারো। কোনোটি শিখতেই তেমন ঝামেলা পোহাতে হবে না কারণ তুমি প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক জিনিসগুলো এতক্ষণে আয়ত্বে এনে ফেলেছ। বই ও ওয়েবসাইটের তালিকা আমি পরিশিষ্ট অংশে লিখেছি।
একজন দক্ষ প্রোগ্রামার হতে গেলে যে জিনিসগুলো লাগবে তা হচ্ছে– ১) এক বা একাধিক প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে ভালো দখল, ২) ভালো একটি IDE ব্যবহারের দক্ষতা, ৩) প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনা, ৪) গণিত ও যুক্তিতে দক্ষতা, ৫) অবজেক্ট ওরিয়েনটেড প্রোগ্রামিংয়ে (OOP– Object Oriented Programming) দক্ষতা, ৬) ডাটা স্ট্রাকচার ও অ্যালগরিদমের মৌলিক জ্ঞান ও তা প্রয়োগের ক্ষমতা, ৭) যোগাযোগে দক্ষতা (Communication Skills), ৮) ইন্টারনেট ঘেঁটে অল্প সময়ে কোনো সমস্যার সমাধান বের করা বা দ্রুত কোন নতুন বিষয় শিখে নেওয়ার দক্ষতা, ৯) একটি সমস্যার পিছনে লেগে থাকার মানসিকতা, ১০) প্রোগ্রামিংয়ের প্রতি ভালোবাসা।
তোমাদের প্রোগ্রামিং জীবন আনন্দময় হোক, তোমাদের নিজের জীবন আনন্দময় হোক, তোমাদের কারণে তোমাদের আশেপাশের মানুষদের জীবন আনন্দময় হোক। সবাইকে শুভেচ্ছা
Share:

0 comments:

Post a Comment

Pages

Theme Support